অন্যান্য
একটা সময়ে বড়পর্দা কাঁপানো চিত্রনায়িকা শাহিনা শিকদার বনশ্রী ও তার একমাত্র ছেলে মেহেদি হাসানকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনও আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পুলিশ। এতে আতঙ্কে বনশ্রী ও তার ছেলে।
মাদারীপুরের শিবচরের মাদবরেরচর এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ছেলে মেহেদি হাসানকে নিয়ে বসবাস করেন নায়িকা শাহিনা শিকদার বনশ্রী। তাদের হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
থানায় লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের শিবচরের মাদবরেরচর এলাকার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে একমাত্র ছেলে মেহেদি হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বসবাস করেন এক সময়ের সিনেমা জগতের নায়িকা শাহিনা শিকদার বনশ্রী। কিন্তু সেখানে এসে ছেলেকে নিয়ে তাকে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
মাদবররের এলাকার খলিল খলিফার ছেলে রাসেল খলিফা ও তার মা কারণে-অকারণে বনশ্রী ও তার ছেলেকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে প্রায়ই বনশ্রীর পরিবারের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে রাসেল তার লোকজন নিয়ে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘরে ঢুকে বনশ্রী ও তার ছেলেকে চলে যেতে বলে। একপর্যায়ে বনশ্রীর ছেলে মেহেদিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে নায়িকার ওপরও হামলা চালানো হয়। এ সময় তারা তাদের মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। আত্মরক্ষার্থে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বিকেলে শিবচর থানায় রাসেলসহ বেশ কয়েকজনের নামে লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী ওই চিত্রনায়িকা। কিন্তু এখনও কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি থানা পুলিশ। এতে আতঙ্ক বাড়ছে বনশ্রী ও তার ছেলের মধ্যে।
শাহিনা শিকদার বনশ্রী বলেন, অভাবের কারণে সরকারি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বসবাস করছি। কিন্তু এখানে এসেও শান্তি নেই। পাশের খলিল খলিফার ছেলে রাসেল খলিফা লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। আমি এর প্রতিকার চাই। ছেলেকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
মাদারীপুরের শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার গোলদার বলেন, ছোটখাটো একটি বিষয় নিয়ে শাহিনা শিকদার বনশ্রী থানায় এসেছিল। ঘটনাস্থলে এখনও পুলিশ যায়নি। বিষয়টি দেখবোনে।
জানা যায়, নব্বইয়ের দশকে মমতাজ আলীর পরিচালনায় সোহরাব রুস্তম সিনেমায় ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে অভিষেক ঘটে বনশ্রীর। এরপর ‘মহা ভূমিকম্প’ ‘নেশা’, ‘ভাগ্যের পরিহাস’সহ আরও অনেক সিনেমায় একাধিক নায়কের সঙ্গে অভিনয় করেন। বরিশালের ছেলে পারভেজ খানকে বিয়ে করেন বনশ্রী। স্বামী ১২ বছর ধরে নেন না সংসারের কোন খবর। বড় মেয়ে নিখোঁজ কয়েক বছর ধরে। দারিদ্রের কবলে পড়ে এখন ঠাঁই হয়েছে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদারীপুরের শিবচর পৌরসভার গুয়াতলা এলাকায় বাবা মজিবর শিকদার ও সবুরজান রিনা বেগমের ঘরে ১৯৭৪ সালের ২৩ আগস্ট জন্ম নেয় এই নায়িকা। দুঃস্থ শিল্পী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এককালীন ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেন। সেখান থেকে মাসে ১৭ হাজার ২৮০ টাকার সুদ পান বনশ্রী।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ঢাকা টেলিগ্রাফ এর দায়ভার নেবে না।