এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান গ্রেফতার

আগের সংবাদ

আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিলের ‘হেক্সা’ জয়

পরের সংবাদ

স্কুলে চিকিৎসক নিয়োগের পরামর্শ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

ঢাকা টেলিগ্রাফ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১ , ৪:৩৭ অপরাহ্ণ

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আপত্তি নেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। তবে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে মেডিকেল অফিসার (চিকিৎসক) নিয়োগে সরকারের উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো একজন শিক্ষার্থীর পাঠদান চলাকালীন অসুস্থতার লক্ষণ দেখামাত্রই তাকে আলাদা করে সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে হবে। এ নিয়ে যাতে অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক না ছড়ায় সেটিও সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে।

এ বিষয়ে হেলথ অ্যান্ড হোপ কেয়ার হসপিটালের চেয়ারম্যান এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী জাগ্রত কন্ঠকে বলেছেন, স্কুল-কলেজ খুলতে হবে, এটা ঠিক আছে। তবে খোলার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ করোনা সংক্রমণ ঢেউয়ের মতো; ধীরে ধীরে চূড়ায় উঠে আবার নেমে আসে। করোনা সংক্রমণ যখন ১০ শতাংশের ওপরে উঠবে তখন আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেব। আর ৫ শতাংশের নিচে নামলে আবার খুলে দিতে হবে। এখন ১০ শতাংশের কম, খুলে দেওয়াটা বিজ্ঞানসম্মত। কিন্তু আমরা জানি করোনার সংক্রমণ অক্টোবরে ফের বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে। তখন সংক্রমণ ১০ শতাংশ ছাড়ালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে এবং ১৮-এর ওপরে উঠলে লকডাউনের পরামর্শ দেবে সরকারকে। তাই খোলা-বন্ধ নির্ভর করে করোনা সংক্রমণের তীব্রতার ওপরে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে যে তোড়জোড় সেটা সঠিক ছিল না জানিয়ে লেলিন চৌধুরী বলেন, এই অঙ্গনের সঙ্গে যারাই জড়িত ছিল তাদের মধ্যে একটা হোমওয়ার্ক থাকা দরকার ছিল; যা আমরা দেখতে পাইনি। স্কুল-কলেজ ধোয়া-মোছার কাজ দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ প্রথম বড় একটা কাজ করে ফেলেছে। এটা নিন্তাতই বাহুল্য; এটার দরকার ছিল না। গত ১৭ মাসে তারা সবাই বসে ছিল। আর অন্তত ১৮ বার খোলার ঘোষণা দিয়েও খুলতে পারেনি।

শুরুতে আমাদের একটা বিষয়ে নজর দিতে হবে জানিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিশ্চিত করতে হবে প্রত্যেক শিশু যেন মাস্ক পরে। স্কুলের শিক্ষক যারা তাদের পর্যবেক্ষণের ওপরে জোর দিতে হবে ক্লাসে কোনো শিশু ঝিমিয়ে পড়ছে কি না কিংবা অসুস্থ হয়ে বেঞ্চে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে কি না। এছাড়া কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করছে কি না। এসব নজরে এলে তাৎক্ষণিক আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এই অস্বাভাবিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন করে মেডিকেল চিকিৎসক নিয়োগ করা উচিত।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখন টিকা আমদানিতে নজর দেওয়া উচিত। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকেও তাদের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা না করে ১৮ বছরের নিচের শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এরই মধ্যে চীনসহ ১৭টি দেশে এই উদ্যোগ নিয়ে টিকা কার্যক্রম চলছে। আমাদের এখানে একটু ট্রায়াল দিয়ে টিকা দেওয়া উচিত।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বেনজির আহমেদ জাগ্রত কন্ঠকে বলেন, খোলার আগে সরকারের উচিত একটা নির্দেশনা তৈরি করা, কী হলে স্কুল খোলা ও বন্ধ থাকবে। কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পর্যবেক্ষণ করতে হবে উপজেলা ও শহরকেন্দ্রিক করোনা পরিস্থিতি। বতর্মানে কোনো কোনো জেলায় সংক্রমণ ৯ শতাংশ, আবার কোথাও ১৮ শতাংশ। তাহলে স্কুল খোলার ক্ষেত্রে এসব বিষয় আমলে নিতে হবে। সংক্রমণ বিবেচনায় ঝুঁকি আছে এখনো অনেক এলাকায়। তাই সতর্ক থাকতে হবে সর্বদা।

তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধ ও চর্চা সংক্রান্ত বিষয়ে একটা গাইড লাইন থাকা দরকার। পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায় একটা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটি করোনা প্রতিরোধ ও চর্চা তদারকি করবে। কীভাবে শিক্ষার্থীরা স্কুলে ঢুকবে ও বের হবে, কত দূরত্বে কত জন বসবে এবং মাস্ক পরছে কি না এসব দেখবে কমিটি। এই ব্যাপারে একটা গাইডলাইন ও প্রশিক্ষণের দরকার ছিল।

জাক/পা আ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ঢাকা টেলিগ্রাফ এর দায়ভার নেবে না।